কিছু কথা
আমার আব্বাজান রহ. নিরব প্রকৃতির একজন মুখলেছ ও বুযুর্গ মানুষ ছিলেন। জীবনে কোন দিন নিজের কৃতিত্ব কারো নিকট যাহির করেননি। ২০২০ইং সনে একবার আব্বাজান রহ.-এর নিকট অতিত জীবনের ইতিহাস লেখার প্রস্তাব পেশ করলাম। আপনি বলুন আমি লিখে রাখি। আব্বাজান বললেন আমার জীবনী লিখে কি করবে ? কাজ করো।
তবে আব্বাজান রহ.-এর সঙ্গে ভাতর সফর,উমরার সফর ও মৃত্যুর দুই মাস পূর্বে কুমিল্লায় নিজ গ্রামে শিবানীপুরের সফরে তাঁর জীবনের অনেক অজানা তথ্য বার বার জিজ্ঞেস করে জানতে পেরেছি। সেই তথ্যকে পুঁজি করেই আজকের এই লেখা।
আব্বাজান রহ. অত্র জামি`আ প্রতিষ্ঠা ও মহিলাদের দ্বীনি শিক্ষাকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছানোর লক্ষ্যে জীবনে বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা, ঘাত-প্রতিঘাত ও মানুষের অনেক কটুকথা সহ্য করে স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ও দেশের বড় বড় বুযুর্গানে দ্বীনসহ বিশ্বেও; বিশেষ করে ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, কুয়েত, সৌদিআরবের উল্লেখযোগ্য ওলামাদের সঙ্গে পরামর্শ ও তাঁদের সমর্থন লাভ করেই বাংলাদেশে মহিলা মাদরাসা ব্যাপকভাবে কায়েমে সফল হয়েছেন।
তাই আব্বাজান রহ.-এর জীবনের বৈচিত্রময় দিকগুলো সকলের সামনে ফুঁটিয়ে তোলা জরুরি মনে করেছি। এরই প্রেক্ষিতে ১৭ জিলহজ্ব ১৪৪৩ হিজরী মোতাবেক ১৬ জুলাই ২০২২ইং হজ্বের সফরে তাওয়াফ করে রোজা অবস্থায় রোজ শনিবার সকাল আট ঘটিকায় মসজিদে হারামের লাইব্রেরিতে বসে আব্বাজান রহ.-এর “বৈচিত্রময় জীবনকথা” বইটি লিখতে শুরু করি।
লেখার শুরুতে আব্বাজান রহ.-এর ৭৮ বছর হায়াতে যিন্দেগিকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করি। বিষয়গুলো হলো-ক. সংক্ষিপ্ত জীবনী, খ.কর্ম জীবন ও মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পেক্ষাপট, গ. ভারত সফর, ঘ. উমরার সফর, ঙ. দেশীয় ও বহির্বিশ্বের ওলামাদের সমর্থন লাভ, চ. দাওয়াতি কার্যক্রম, ছ. যিকির, ফিকির ও ইবাদতে একাগ্রতা, দুনিয়াবিমুখতা ইত্যাদি। উক্ত বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে আব্বাজান রহ.-এর জীবনী লেখা হয়েছে।
তবে ২৯ নভেম্বর ২০২২ইং আব্বাজান রহ.-এর জীবন-কর্ম শীর্ষ<ক আলোচনা সভাকে সামনে রেখে সংক্ষেপে জীবনের মূল দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। বিষেশ করে মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট এবং কীভাবে তিনি অল্প সময়ে সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে মহিলা মাদরাসার মিশন ছড়িয়ে দিতে সফলতা অর্জন করেছেন, তা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। খুবই অল্প সময়ে ছোট্ট পরিসরে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে। বিস্তারিত জীবনী পরবর্তীতে পাঠকের সামনে পেশ করা হবে ইনশা আল্লাহ।
বইটির নামকরণের ক্ষেত্রে বার বার বাইতুল্লাহ শরিফে তাওয়াফ করে দু‘আ করা হয়েছে। সর্বশেষ আল্লাহ পাকের মেহেরবানীতে “হযরত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস রহ.-এর বৈচিত্রময় জীবনকথা” নামটিই উপযুক্ত মনে হয়েছে।
বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে মাওলাানা ফয়জুল্লাহ ফাইয়ায (মুহাদ্দিস, মুসলিম বাজার মাদরাসা), মাওলানা আনাস (মুহাদ্দিস, অত্র জামি‘আ) ও মাওলানা শাহ্ জালালসহ যারা সহযোগিতা করেছেন, আল্লাহ তা‘আলা সকলকে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন !